ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়ালেন আন্তর্জাতিক নেতারা

  • Company Logo
    বার্তা নিউজ
    প্রকাশ 27-September-2025 11:17 PM
ড. ইউনূসের পাশে দাঁড়ালেন আন্তর্জাতিক নেতারা

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও তার অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সমর্থন জানাতে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে তার হোটেল স্যুইটে বিশ্বের বিভিন্ন প্রভাবশালী নেতা একত্রিত হন। তারা বাংলাদেশকে সহযোগিতা ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদানের অঙ্গীকার করেন।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনের ফাঁকে লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ও নিজামি গঞ্জাভি আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের (এনজিআইসি) সহসভাপতি ভাইরা ভিকে-ফ্রেইবারগারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এনজিআইসির নামকরণ করা হয়েছে খ্যাতনামা একাদশ শতকের পারস্য কবি নিজামি গঞ্জাভির নামে।

উচ্চপর্যায়ের এই দলে ছিলেন স্লোভেনিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বরুত পাহোর, সার্বিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট বোরিস তাদিচ, লাটভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট এগিলস লেভিটস, ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ও বেলজিয়ামের সাবেক প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, গ্রিসের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জর্জ পাপান্দ্রেউ, বুলগেরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট রোসেন প্লেভনেলিভ, ক্রোয়েশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো যোসিপোভিচ, বসনিয়া-হার্জেগোভিনার সাবেক প্রেসিডেন্ট ম্লাদেন ইভানিচ এবং মরিশাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট আমিনা গুরিব-ফাকিম।

এছাড়া কমনওয়েলথের সাবেক মহাসচিব, জর্জিয়ার সাবেক উপ-প্রধানমন্ত্রী, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের চারজন সাবেক সভাপতি, একাধিক সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী, বিশ্বব্যাংকের সাবেক সহসভাপতি ও এনজিআইসির সহসভাপতি ইসমাইল সেরাগেলদিন, মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটসের প্রেসিডেন্ট কেরি কেনেডি, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (আইএইএ) এবং জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

সাক্ষাৎকারে নেতারা ড. ইউনূসের নেতৃত্ব ও তার আজীবন দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় অবদানের প্রশংসা করেন। তারা বলেন, “আমরা আপনাকে এবং বাংলাদেশের জনগণকে সমর্থন জানাতে এসেছি। আমরা আপনার পাশে আছি।”

নেতারা উল্লেখ করেন, ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। তবে দীর্ঘ ১৬ বছরের দুর্নীতি, শোষণ ও কু-শাসনের কারণে দেশটি এখন বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দেশ পুনর্গঠন ও অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন।

সাম্প্রতিক বাংলাদেশ সফরকালে কেরি কেনেডি দেশের মানবাধিকার অগ্রগতির প্রশংসা করেন। জর্জটাউন ইনস্টিটিউট ফর উইমেন, পিস অ্যান্ড সিকিউরিটির নির্বাহী পরিচালক মেলান ভারভিয়ার জানান, প্রতিষ্ঠান শিগগিরই জুলাই বিপ্লবের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন ঘোষণা করবে। এনজিআইসির ভাইস প্রেসিডেন্ট ইসমাইল সেরাগেলদিন বলেন, “আপনাদের প্রয়োজন হলে আমরা আছি।”

ড. ইউনূস অপ্রত্যাশিত এই সমর্থনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এটি একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আপনাদের একসঙ্গে আমাদের সমর্থনে দাঁড়ানো সত্যিই অবিশ্বাস্য।”

তিনি বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি তুলনা করেন একটি বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সঙ্গে। তার ভাষ্য, “দেশটি গত ১৬ বছর ধরে একটি ভূমিকম্পের মধ্যে ছিল, যার মাত্রা রিখটার স্কেলে ৯। সীমিত সম্পদের কারণে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। মানুষ তাৎক্ষণিক পরিবর্তন দেখতে চায়। আমাদের অবশ্যই তরুণদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে—তারা একটি নতুন বাংলাদেশ খুঁজছে।”

সংশ্লিষ্ট খবর

মন্তব্য