দেশের সর্ববৃহৎ ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এখন ওয়ালটনে

  • Company Logo
    ডেস্ক রিপোর্ট , বর্তমান
    প্রকাশ : ২৬ অক্টোবর ২০২৫, রবিবার ০৬:১৬ পিএম
দেশের সর্ববৃহৎ ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এখন ওয়ালটনে
দেশের সর্ববৃহৎ ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্ল্যান্ট এখন ওয়ালটনে

বাংলাদেশের শিল্পখাতকে টেকসইভাবে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুসারে উৎপাদন প্রক্রিয়া ও কর্মক্ষেত্রসহ সব দিকেই পরিবেশবান্ধব নীতি অনুসরণ করছে দেশের সুপারব্র্যান্ড ও টেক জায়ান্ট ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি। প্রতিষ্ঠানটি জিরো কার্বন নিঃসরণ, সাশ্রয়ী জ্বালানি, পানি ও বিদ্যুতের ব্যবহার নিশ্চিত করতে নবায়নযোগ্য বিভিন্ন ক্লিন ও গ্রিন এনার্জি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নিজস্ব অর্থায়নে ১ মেগাওয়াট ক্ষমতার ফ্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপন করেছে ওয়ালটন, যা বাংলাদেশের শিল্পখাতে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার এবং সবুজ ও টেকসই শিল্প উন্নয়নের ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

গাজীপুরের চন্দ্রায় ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে জলাশয়ের উপর স্থাপিত এই ফ্লোটিং সোলার প্রজেক্টটি দেশের বেসরকারি উদ্যোগে নির্মিত সর্ববৃহৎ সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এর আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বুলনপুরে স্থাপিত ২.৩ মেগাওয়াট ক্ষমতার সোলার প্রকল্পের অংশ হিসেবে জলাশয়ে ০.৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার ভাসমান সোলার প্যানেল স্থাপন করা হয়েছিল।

ওয়ালটনের এনভায়রনমেন্ট, হেলথ অ্যান্ড সেফটি বিভাগের প্রধান মোস্তাফিজুর রহমান রাজু বলেন, “ফ্লোটিং সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট স্থাপনের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশের শিল্পখাতে নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহারকে আরও প্রসারিত করেছি। এটি প্রমাণ করে যে, পরিবেশবান্ধব শিল্পোন্নয়ন সম্ভব এবং প্রযুক্তি ও প্রকৃতির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা যায়।”

তিনি আরও জানান, এই জলাশয়ে ভাসমান সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে না, বরং মাছ চাষ, ভূমি সংরক্ষণ, পানির বাষ্পীভবন হ্রাস এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ফ্যাক্টরি বন্ধ বা আংশিক উৎপাদন থাকলেও এই প্ল্যান্ট থেকে উৎপাদিত অতিরিক্ত বিদ্যুৎ নেট মিটারিং সিস্টেমের মাধ্যমে জাতীয় গ্রিডে সংযুক্ত হচ্ছে, যা দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহেও সহায়ক। ওয়ালটন ইতোমধ্যে আরও দুটি জলাশয়ে একই ধরনের ফ্লোটিং সোলার প্ল্যান্ট স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

এই প্রকল্পে ব্যবহৃত ফ্লোটিং স্ট্রাকচারগুলো ফুড-গ্রেড প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি, যা পানির ও জলজ প্রাণীর জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। প্যানেলগুলো এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে, যাতে মাছের স্বাভাবিক জীবনচক্রে কোনো বাধা সৃষ্টি না হয়। এই ফ্লোটিং সিস্টেম আগামী ২০ বছর পর্যন্ত কার্যকরভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে।

উল্লেখ্য, ওয়ালটন হেডকোয়ার্টার্সে বিভিন্ন ছাদ, ফুটপাত এবং খালি জায়গায় ১০ মেগাওয়াট ক্ষমতার সৌর শক্তি প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার নিশ্চিত করেছে। শিল্প প্রক্রিয়ায় পানি সাশ্রয় ও পুনঃব্যবহারের জন্য ইটিপি সিস্টেম ব্যবহার করে প্রক্রিয়াজাত পানির প্রায় ৭৫% নিরাপদভাবে পুনর্ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া, ই-বর্জ্য সংগ্রহ ও পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ, প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহার ও আপসাইক্লিংয়ের মাধ্যমে বর্জ্য কমিয়ে সম্পদের পুনঃব্যবহার নিশ্চিত করা হচ্ছে।

এসব উদ্যোগের ফলে প্রতিষ্ঠানটি ৯১১,৮২৩ মেট্রিক টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসরণ হ্রাস করতে সক্ষম হয়েছে এবং সামগ্রিক কার্বন ফুটপ্রিন্ট ১০% হ্রাস করেছে। এটি প্রমাণ করে, ওয়ালটন কেবল পরিবেশবান্ধব নীতি গ্রহণই করেনি, বরং তা বাস্তবে প্রয়োগ করে দীর্ঘমেয়াদে টেকসই শিল্প উন্নয়ন ও সামাজিক দায়বদ্ধতার একটি মডেল স্থাপন করেছে।

মন্তব্য