ইলিশের প্রজনন মৌসুমে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও সাগরে নেমেছেন জেলেরা। প্রথম রাতের জালেই ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় ভালো পরিমাণ মাছ পেয়ে ভোরেই ঘাটে ফিরছেন অনেকে। এতে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার ইলিশ ঘাটগুলোতে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে উপজেলার বুড়িরচর সূর্যমুখী ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘাটজুড়ে চলছে ব্যস্ততা আর বেচাকেনার উৎসব। শ্রমিকরা মাথায় টুকরি ভর্তি ইলিশ নিয়ে দৌড়াচ্ছেন নৌকা থেকে বাজারে, আর পাইকারদের হাঁকডাকে মুখরিত পুরো এলাকা। কেউ দরদাম করছেন, কেউ বা মাছ তুলছেন ট্রলারে—ঘাট যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
সূর্যমুখী ঘাট মাছ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলাউদ্দিন বলেন, “ভোর থেকেই বিক্রি শুরু হয়েছে। জেলেরা মাত্র কয়েক ঘণ্টায় সাগর থেকে ভালো মানের ইলিশ ধরতে পেরেছেন। অনেক দিন পর এমন জমজমাট বাজার দেখছি।”
স্থানীয় জেলে ও মাঝি আব্দুল কাদের জানান, “রাত ১২টার পর নদীতে গিয়েছিলাম, সকালে ঘাটে ফিরেছি তিন মণ ইলিশ নিয়ে। মাছগুলো একটু ছোট হলেও দাম ভালো, তাই লাভ হচ্ছে। এখন আবার সাগরে যাচ্ছি। কয়েক দিন এমনভাবে মাছ পেলে আগের ক্ষতি পুষিয়ে যাবে।”
নিষেধাজ্ঞার সময়কাল নিয়ে কিছু জেলে আক্ষেপ জানালেও তারা সরকারি সিদ্ধান্ত মেনে চলেছেন। তাদের মতে, “যদি ৪ অক্টোবরের পরিবর্তে ১৩ অক্টোবর থেকে নিষেধাজ্ঞা শুরু হতো, তাহলে ক্ষতি কিছুটা কম হতো, কারণ তখনই সাগরে প্রচুর ইলিশ পাওয়া যাচ্ছিল।”
এখন হাতিয়ার ঘাটগুলো কর্মচঞ্চল—জেলেদের জালে রুপালি ইলিশের ঝিলিক, তীরে উঠছে মাছভর্তি ঝুড়ি, আর মুখে মুখে আনন্দের হাসি। ২২ দিনের অপেক্ষা শেষে সাগরে নেমে আবারও রুপালি স্বপ্নের সন্ধানে ফিরেছে জেলেদের আশা, ঘাটে ফিরেছে প্রাণচাঞ্চল্য।
